Skip to main content
 

জামালপুর বিচার বিভাগের পথচলা

জামালপুর শহরের আদি নাম সিংহজানী।জামালপুর জেলায় ইয়েমেন থেকে বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত ধর্ম প্রচারকের আগমন ঘটেছিল।তাদের অন্যতম হচ্ছেন হযরত শাহ সুফি শাহ জামাল (রঃ)। হযরত শাহ জামালের (র:) নামে কোন মৌজা, গ্রাম হাট-বাজার কিছুই না থাকলেও তাঁর নামীয় মাজার শরীফ জামালপুর শহরে অবস্থিত। তাঁর নামেই এ জেলার নামকরণ করা হয়েছে। জামালপুর ময়মনসিংহ জেলার মধ্যে প্রথম মহকুমা হিসেবে ১৮৪৫ সালে মর্যাদা লাভ করে। জামালপুর জেলা গঠনের আন্দোলন মূলত: বঙ্গভঙ্গের পরে ১৯১২ সালেই সূচীত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেই জামালপুরকে জেলা করার দাবী বেগবান হয়ে উঠলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৫ সালে জামালপুরকে জেলা করার প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯৭৮ সালে ২৬ ডিসেম্বর জামালপুর বাসীর জন্য একটি আনন্দের দিন। কারণ, এ দিনে জামালপুরকে স্বাধীন বাংলাদেশের ২০ তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

জামালপুর সদরের ঐতিহ্য নকশীকাঁথা ও হস্তশিল্প, কাসা শিল্প, মৃৎ শিল্প এবং তাঁত শিল্প। জামালপুর জেলায় এখনো গ্রামে প্রচুর সংখ্যক ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি ও মহিষের গাড়ি পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণত বিভিন্ন কৃষিপণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হয়।

 

জামালপুর বিচার বিভাগের যাত্রাঃ

জামালপুর বিচার বিভাগের যাত্রা ০১/১২/১৯৮০ খ্রি. তারিখে মাননীয় জেলা জজ জনাব মাহমুদুল আমীন চৌধুরী মহোদয়ের হাত ধরে শুরু হলেও এর ঐতিহ্য বেশ পুরোনো। ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলার মহকুমা হিসেবে বর্তমান জামালপুর জেলার দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচারকার্য ময়মনসিংহ থেকে পরিচালিত হয়ে আসছিলো। পরবর্তীতে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর সদর উপজেলায় বহমান ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেষা দেওয়ানপাড়া নামক স্থানে ‘প্রথম মুন্সেফী আদালত’ এবং ‘দ্বিতীয় মুন্সেফী আদালত’ নামে দুটি দেওয়ানী আদালত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জামালপুর জেলায় বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে জামালপুর জেলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং দুইটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ছাড়াও দুইটি যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত, একটি অর্থঋণ আদালত, দুইটি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ও সাতটি সহকারী জজ আদালতের বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জামালপুর জেলার ‘জেলা আইনজীবী সমিতি’ এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে। জামালপুর জেলা হিসেবে উন্নীত হবার পর বিগত ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং হতে স্থানান্তরিত হয় বর্তমান চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের জায়গায় জেলা জজ আদালত, জামালপুর হিসেবে জেলা বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে বিগত ১২/০৫/১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান আদালত ভবন নির্মিত হলে তৎকাল হতে বিচার কার্যক্রম অত্র ভবনে চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের মাননীয় বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা, মাননীয় বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার এবং হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মাহমুদুল হাসান তালুকদার অত্র জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।

 

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতঃ

১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর সদর উপজেলায় বহমান ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেষা ফৌজদারী মোড় নামক স্থানে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফৌজদারী বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। বিগত ০১/১১/২০০৭ খ্রিস্টাব্দে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের মাধ্যমে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সৃষ্টি হলে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের সকল কার্যক্রম বর্তমান জেলা জজ আদালত ভবন হতে পরিচালিত হতে থাকে। পরবর্তীতে বিগত ০৭/০৮/২০১৫ খ্রিস্টাব্দে নবনির্মিত দশ তলা বিশিষ্ট চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ফৌজদারী বিচার কার্যক্রম চালু হয়ে অদ্যবধি চলমান রয়েছে।

 

বিশেষ জজ আদালত প্রতিষ্ঠাঃ

বিশেষ আইনের মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে বিগত ০৩/০৪/২০০১ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর জেলায় বিশেষ জজ আদালত প্রতিষ্ঠা হয় এবং এই আদালতের বিজ্ঞ বিচারক পদে সর্বপ্রথম আসীন ছিলেন জনাব এ.এইচ.এম. জহুরুল ইসলাম।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাঃ

নারী ও শিশু বিষয়ক বিশেষ অপরাধ দমনের জন্য জামালপুর জেলায় বিগত ২৭/০১/২০০৩ খ্রিস্টাব্দে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১ এর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। জনাব এস.এম. হেলাল উদ্দীন উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক পদে সর্বপ্রথম আসীন ছিলেন।

পরবর্তীতে নারী ও শিশু বিষয়ক বিশেষ অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেলে তা দমনে বিগত ২৬/০৪/২০১৮ খ্রিস্টাব্দে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ এর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। জনাব ড. ইমান আলী শেখ উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক পদে সর্বপ্রথম আসীন ছিলেন।

 

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাঃ

ভূমি জরীপ ও রেকর্ড সংশোধন বিষয়ক মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে বিগত ০৮/০৭/২০১৩ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর জেলায় ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। উক্ত ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক পদে সর্বপ্রথম আসীন ছিলেন জনাব মোঃ আশরাফুজ্জামান জিলানী।

 

জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের কার্যক্রমঃ

গরীব দুঃখীর মামলার ভার সরকার বহন করার নিমিত্তে ও জনমানুষকে বিনা পয়সায় আইনগত সহায়তা প্রদানে সরকারের এই মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে জামালপুর জেলায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০ এর অধীন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের নেতৃত্বে জেলা লিগ্যাল এইড অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

 

 

 

 

সর্বশেষ হালনাগাদঃ ১৫/১১/২০২২ খ্রি.